Tax Reabet পেতে কোথায় বিনিয়োগ করবেন?
আপনি জানেন কি সঠিকভাবে বিনিয়োগ করলে তার উপর আয়কর রেয়াত পাওয়া যায়?এবং এর ফলে আপনার আয়কর অনেকাংশে হ্রাস পেতে পারে?
তবে এই আয়কর রেয়াত পেতে হলে আপনাকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কর্তৃক নির্ধারিত কিছু খাতে বিনিয়োগ করতে হবে।
এর জন্য চাই সঠিক ট্যাক্স প্ল্যানিং। ট্যাক্স প্ল্যানিং এর ফলে আয়কর একদিকে যেমন হ্রাস পায় তেমনি অন্যদিকে বিনিয়োগের অংক বৃদ্ধি পায়।
কিন্তু সেজন্য আপনাকে জানতে হবে কোথায় কোথায় বিনিয়োগ করলে আপনি তার উপর আয়কর রেয়াত পাবেন।
* কোথায় বিনিয়োগ করবেন?
আয়কর অধ্যাদেশ ১৯৮৪-এর ষষ্ঠ সিডিউল পার্ট-বি, ধারা ৪৪ (২) (বি) অনুযায়ী একজন ব্যাক্তি করদাতা কোথায় বিনিয়োগ করলে তার উপর আয়কর রেয়াত পাবেন তা উল্লেখ রয়েছে। সঠিকভাবে না জানার কারনে অনেকেই আয়কর বেশি দিয়ে থাকেন। আয়কর আইনে সরকার করদাতাদের যে সুবিধা দিয়ে রেখেছে তা জেনে বিনিয়োগ করাই বুদ্ধিমানের কাজ।
আপনি মাস শেষে খরচ করে অবশিষ্ট টাকা হয়তো আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা রেখে দেন। সেটা হতে পারে সঞ্চয়ী হিসাব বা চলতি হিসাব।
আবার বছর শেষে এই টাকা যখন জমে একটা বড় অংক হয় তখন হয়তো স্থায়ী আমানত হিসেবে রেখে দেন।এখানে আপনি বিনিয়োগ ঠিকই করেছেন এবং সেখান থেকে আপনি মাস শেষে বা বছর সেষে একটা রিটার্নও পাচ্ছেন।
কিন্তু প্রতি বছর যে আপনি আয়কর দিচ্ছেন সেটা কমাতে পারতেন যদি আপনি সেই বিনিয়োগকৃত টাকাটা সঠিক খাতে বিনিয়োগ করতেন।
তাহলে চলুন জেনে নেই কোথায় বিনিয়োগ করলে আপনার আয়কর কমবেঃ
1. পুজি বাজারে নিবন্ধিত কোন শেয়ার, মিউচ্যুয়াল ফান্ড অথবা ডিবেঞ্চার
2. বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক ইস্যুকৃত ট্রেজারি বন্ড
3. কোন সিডিউল ব্যাংক অথবা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে সর্বোচ্চ বাৎসরিক ৬০,০০০ টাকা পর্যন্ত ডিপিএস
4. জীবন বীমা প্রিমিয়াম (বাৎসরিক মোট বীমাকৃত অংকের সর্বোচ্চ ১০%)
5. রাজস্ব বোর্ড কর্তৃক নির্ধারিত সেভিংস সার্টিফিকেট
6. একটা ডেস্কটপ কম্পিউটার (সর্বোচ্চ ৫০,০০০ টাকা) অথবা একটা ল্যাপটপ কম্পিউটার (সর্বোচ্চ ১,০০,০০০ টাকা)
7. স্বীকৃত প্রভিডেন্ট ফান্ডে কন্ট্রিবিউশন ইত্যাদি।
এতো গেলো নিজের জন্য বা পরিবারের সদস্যদের জন্য ভবিষ্যতের আর্থিক নিরাপত্তার বিষয়। কিন্তু এর বাইরে অনেকেই সমাজ সেবামূলক কাজ করে আনন্দ পান।আর্থিক সুবিধার কথা বাদ দিয়ে সমাজের মানুষের উপকার করাটাই তাদের আসল উদ্দেশ্য।
2. বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক ইস্যুকৃত ট্রেজারি বন্ড
3. কোন সিডিউল ব্যাংক অথবা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে সর্বোচ্চ বাৎসরিক ৬০,০০০ টাকা পর্যন্ত ডিপিএস
4. জীবন বীমা প্রিমিয়াম (বাৎসরিক মোট বীমাকৃত অংকের সর্বোচ্চ ১০%)
5. রাজস্ব বোর্ড কর্তৃক নির্ধারিত সেভিংস সার্টিফিকেট
6. একটা ডেস্কটপ কম্পিউটার (সর্বোচ্চ ৫০,০০০ টাকা) অথবা একটা ল্যাপটপ কম্পিউটার (সর্বোচ্চ ১,০০,০০০ টাকা)
7. স্বীকৃত প্রভিডেন্ট ফান্ডে কন্ট্রিবিউশন ইত্যাদি।
এতো গেলো নিজের জন্য বা পরিবারের সদস্যদের জন্য ভবিষ্যতের আর্থিক নিরাপত্তার বিষয়। কিন্তু এর বাইরে অনেকেই সমাজ সেবামূলক কাজ করে আনন্দ পান।আর্থিক সুবিধার কথা বাদ দিয়ে সমাজের মানুষের উপকার করাটাই তাদের আসল উদ্দেশ্য।
কিন্তু জাতীয় রাজস্ব বোর্ড মানুষকে সমাজ সেবামূলক কাজে উৎসাহ দেয়ার জন্য কিছু ক্ষেত্রে আয়কর রেয়াতের সুবিধা দিয়েছেন।আপনি উল্লেখিত সেই সব খাতে অনুদান দিয়ে আয়কর রেয়াত নিতে পারেন।
* কোথায় অনুদান দিবেন?
আপনি যদি আয়কর রেয়াত পেতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে মনে রাখতে হবে রাজস্ব বোর্ড স্বীকৃত বা অনুমোদিত ফান্ডে বা প্রতিষ্ঠানে আপনাকে অনুদান দিতে হবে।কেবল তখনই আপনি সেই দানকৃত অর্থের উপর আয়কর রেয়াত দাবি করতে পারবেন।
উপরে বর্ণিত সিডিউলে কোন কোন খাতে দান করলে আপনার দান আয়কর রেয়াতযোগ্য হবে এবার চলুন সেগুলো জেনে নেই।
1. কোন দাতব্য চিকিৎসালয় যেটা সিটি কর্পরেশনের বাইরে অবস্থিত। তবে সেখানে অনুদানকৃত টাকা অবশ্যই সেই চিকিৎসালয় স্থাপনের এক বছর পরে হতে হবে।
2. সমাজ কল্যাণ অধিদপ্তরের অনুমোদিত কোন প্রতিষ্ঠান যেটা প্রতিবন্ধী মানুষের কল্যাণের জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তবে এক্ষেত্রেও প্রতিষ্ঠানটি স্থাপনের এক বছর পরে অনুদানকৃত টাকা হতে হবে।
3. যাকাত ফান্ড অর্ডিন্যান্স ১৯৮২ দ্বারা প্রতিষ্ঠিত যাকাত ফান্ডে অনুদানকৃত টাকা।
4. বাংলাদেশে আগা খান উন্নয়ন কর্মসূচী-এর অধীনে প্রতিষ্ঠিত কোন আর্থ-সামাজিক বা সাংস্কৃতিক উন্নয়নমূলক পতিষ্ঠানে দানকৃত টাকা।
5. সরকার কর্তৃক অনুমোদিত জনকল্যাণমূলক বা শিক্ষামূলক প্রতিষ্ঠানে অনুদানকৃত টাকা।
6. মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি সংরক্ষণের জন্য জাতীয় পর্যায়ে কোনো প্রতিষ্ঠানে অনুদানকৃত টাকা।
7. জাতির পিতার স্মৃতি সংরক্ষণের জন্য জাতীয় পর্যায়ে কোনো প্রতিষ্ঠানে অনুদানকৃত টাকা।
2. সমাজ কল্যাণ অধিদপ্তরের অনুমোদিত কোন প্রতিষ্ঠান যেটা প্রতিবন্ধী মানুষের কল্যাণের জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তবে এক্ষেত্রেও প্রতিষ্ঠানটি স্থাপনের এক বছর পরে অনুদানকৃত টাকা হতে হবে।
3. যাকাত ফান্ড অর্ডিন্যান্স ১৯৮২ দ্বারা প্রতিষ্ঠিত যাকাত ফান্ডে অনুদানকৃত টাকা।
4. বাংলাদেশে আগা খান উন্নয়ন কর্মসূচী-এর অধীনে প্রতিষ্ঠিত কোন আর্থ-সামাজিক বা সাংস্কৃতিক উন্নয়নমূলক পতিষ্ঠানে দানকৃত টাকা।
5. সরকার কর্তৃক অনুমোদিত জনকল্যাণমূলক বা শিক্ষামূলক প্রতিষ্ঠানে অনুদানকৃত টাকা।
6. মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি সংরক্ষণের জন্য জাতীয় পর্যায়ে কোনো প্রতিষ্ঠানে অনুদানকৃত টাকা।
7. জাতির পিতার স্মৃতি সংরক্ষণের জন্য জাতীয় পর্যায়ে কোনো প্রতিষ্ঠানে অনুদানকৃত টাকা।
আবারও মনে করিয়ে দিচ্ছি, উপরে বর্ণিত খাতে বিনিয়োগের পূর্বে জেনে নিন অবশ্যই প্রতিষ্ঠানটি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের অনুমোদিত। তা না হলে আপনি সমাজের উপকার ঠিকই করেছেন। কিন্তু আপনি আয়কর রেয়াত পাবেন না।
যেমন অনেকেই মসজিদ-মাদ্রাসায়, এতিমখানায় দান করে থাকেন। সেখানে কেউ আয়কর রেয়াতের কথা চিন্তা করে করেন না।
তারা সৃষ্টিকর্তার সন্তুষ্টি লাভের আশায় করে থাকেন।মোট কথা হলো আপনি কি উদ্দেশ্যে করতে চাচ্ছেন তা অর্জন করতে পারছেন কিনা সেটাই আসল কথা।
* কতো টাকা বিনিয়োগ সুবিধা পাবেন?
ধারা ৪৪ (২) (বি) এবং (সি) অনুযায়ী আপনি কতো টাকা বিনিয়োগ করলে তার উপর আয়কর রেয়াত পাবেন তা উল্লেখ রয়েছে।
তবে আপনি এর উপরে বিনিয়োগ করতে পারবেন না সে ধরনের কোনো বাধা নেই। সেক্ষেত্রে আপনি সেই বিনিয়োগকৃত টাকার উপর আয়কর রেয়াত পাবেন না।
উল্লেখিত তিনটি অংক হলোঃ
১. আপনার মোট করযোগ্য আয়ের ২৫% (কিছু ব্যাতিক্রম ছাড়া)
২. দেড় কোটি টাকা
৩. আপনার প্রকৃত বিনিয়োগকৃত টাকা
উপরে উল্লেখিত তিনটি অংকের মধ্যে যেটি সবচেয়ে কম হবে তার উপরই আপনি আয়কর রেয়াত পাবেন।
আপনার ন্যূনতম কতো টাকা বিনিয়োগ করতে হবে সেটা আয় বর্ষ শেষ হওয়ার আগেই জানতে হবে। আপনি যদি আগে থেকে না জানেন তাহলে অনেক সময় আপনি যে পরিমান বিনিয়োগ সুবিধা পেতেন তা থেকে কম পেতে পারেন।
এক্ষেত্রে আপনি যদি আগে থেকেই আয়কর দিয়ে থাকেন তাহলে গত বছরের মোট করযোগ্য আয়কে ভিত্তি ধরে সারা বছর ধরে বিনিয়োগ করে যেতে পারেন।
বছর শেষের দিকে এসে আনুমানিক আপনার কতো মোট করযোগ্য আয় হতে পারে সে হিসেব করে বিনিয়োগের পরিমান কমাতে বা বাড়াতে পারেন।
আর যারা নতুন আয়কর দিতে যাচ্ছেন তারাও সারা বছর কতো আনুমানিক আয় হতে পারে সে মতো বিনিয়োগ করতে পারেন। এবং বছর শেষে দরকার মতো বিনিয়োগ কমাতে বা বাড়াতে পারেন।
* কতো আয়কর রেয়াত পাবেন?
২০১৫-১৬ আয় বর্ষের আগে বিনিয়োগযোগ্য অংকের উপর সরাসরি ১৫% হারে আয়কর রেয়াত পেতেন করদাতাগণ।কিন্তু ২০১৫-১৬ থেকে বিনিয়োগকৃত টাকাকে তিনটি ভাগে ভাগ করে তিনটি হার নির্ধারণ করে দিয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড।
তিনটি হার হলোঃ
১. প্রথম ২,৫০,০০০ টাকার উপর ১৫%
২. পরবর্তী ৫,০০,০০০ টাকার উপর ১২%
৩. অবশিষ্ট বিনিয়োগকৃত টাকার উপর ১০%
অর্থাৎ আপনি উপরে উল্লেখিত হারে আয়কর রেয়াত পাবেন যেটা চূড়ান্তভাবে আপনার মোট আয়কর থেকে বাদ যাবে।
বাদ দিয়ে যেটা থাকবে সেটাই আপনাকে আয়কর হিসেবে জমা দিতে হবে।
বাদ দিয়ে যেটা থাকবে সেটাই আপনাকে আয়কর হিসেবে জমা দিতে হবে।
তবে আপনি যদি আগে উৎসে কর দিয়ে থাকেন তাও বাদ যাবে। এসব বাদ যাওয়ার পর যা থাকবে কেবল সেটাই আপনাকে আয়কর হিসেবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড-কে দিতে হবে।